মেয়েদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রূপশ্রী প্রকল্প (Rupashree Prakalpa). আপনি যদি এই প্রকল্পে আবেদন করেন তাহলে রাজ্য সরকারের তরফে পেয়ে যাবেন ২৫,০০০ টাকা। মেয়েদের বিয়ের জন্য বাবা, মায়ের চিন্তা দূর করছেন এই স্কিম। আবেদন যোগ্যতা ও আবেদন পদ্ধতি বিস্তারিত জেনে নিন।
WB Rupashree Prakalpa 2025
পশ্চিমবঙ্গ সরকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) মেয়েদের জন্য চালু করেছেন বিভিন্ন প্রকল্প (Government Scheme). তার মধ্যে অন্যতম রূপশ্রী প্রকল্প। ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল চালু হয় রূপশ্রী স্কিম।
এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য, দরিদ্র ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের মেয়েদের বিয়ের সময় অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করা। বাংলার সমাজে যেখানে অনেক সময় বিয়ের খরচই হয়ে ওঠে পরিবারের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা, সেখানে এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
Rupashree Prakalpa Benefits
এই প্রকল্পের আওতায় একজন কন্যার বিয়ের জন্য পরিবারকে ২৫,০০০ টাকা এককালীন অনুদান দেওয়া হয়। এই টাকা সরাসরি কন্যার নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়, ফলে আর্থিক লেনদেনে কোনো ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতির আশঙ্কা থাকে না। অনুদান বিয়ের খরচ সামলাতে যেমন সাহায্য করে, তেমনই পরিবারকে মানসিক স্বস্তিও দেয়।
Rupashree Prakalpa Eligibility Criteria
এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত মানতে হয়—
- কন্যার বয়স অবশ্যই ১৮ বছর বা তার বেশি হতে হবে।
- এটি হতে হবে তাঁর প্রথম বিবাহ।
- পরিবারের বা কন্যার বার্ষিক আয় ১.৫ লক্ষ টাকার বেশি হলে আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।
- বরের বয়স অন্তত ২১ বছর হতে হবে।
- আবেদনকারীর অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে, অথবা রাজ্যে কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে বসবাসের প্রমাণ দিতে হবে।
- কন্যার নামে একটি সক্রিয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক।
আরও পড়ুন: জন্মদিনে দেশবাসীকে খুশির খবর শোনালেন মোদি। ৪ কোটিরও বেশি মানুষ পাবেন বিনামূল্যে চিকিৎসা
Rupashree Prakalpa Application Process
এই প্রকল্পের জন্য আবেদন ফর্ম পাওয়া যায় স্থানীয় ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার (BDO), সাব-ডিভিশনাল অফিসার (SDO), অথবা পৌরসভা/মিউনিসিপ্যাল অফিস থেকে। বর্তমানে বেশ কিছু জেলায় ফর্ম অনলাইনে ডাউনলোডও করা যায়।
বিয়ের অন্তত এক মাস আগে আবেদন জমা দিতে হয়। সঙ্গে জমা দিতে হবে জন্মসনদ, আধার কার্ড, ঠিকানার প্রমাণ, আয়ের সনদ, এবং বিয়ের নিবন্ধনের কাগজপত্র। যাচাইকরণের পর সংশ্লিষ্ট দপ্তর আবেদন অনুমোদন করলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনুদান সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়। এছাড়াও আপনি অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
উপসংহার
এই প্রকল্পের লক্ষ্য শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, এর সামাজিক গুরুত্বও অপরিসীম। বাংলার অনেক পরিবার এখনও কন্যাসন্তানকে বোঝা হিসেবে দেখে। বিয়ের খরচ মেটাতে না পারার ভয়ে অনেকেই মেয়ের বিয়ে পিছিয়ে দেয় অথবা অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় বিয়ে দিয়ে দেয়। রূপশ্রী প্রকল্প সেই মানসিকতার পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে। সরকার স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে, কন্যা এখন আর বোঝা নয়, তাঁর মর্যাদা রক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় সরকার পাশে আছে।