পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের DA বৃদ্ধি নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত। স্বস্তি কর্মী মহলে।

DA বৃদ্ধি নিয়ে আদালতের চাপ রাজ্যকে, খুশি সরকারি কর্মচারীরা।

বেতন বৃদ্ধি অর্থাৎ DA Salary Hike নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা নানা চেষ্টা করে চলেছেন কিন্তু কোন ফল প্রাপ্ত করতে পারছিলেন না। এর জন্য কিছু দিন আগে বিধানসভা অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন তারা। এর পাশাপাশি এত দিন কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিলেন সরকারি কর্মীরা। কিন্তু হাইকোর্ট নির্দেশ দিলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার DA বৃদ্ধি করেনি উপরন্তু তারা সুপ্রিম কোর্টের কাছে পিটিশন দাখিল করেছে। এবার এই DA’র মামলা সুপ্রিম কোর্টের দরজায়।

বিগত কয়েক বছরে Dearness Allowance নিয়ে নানা ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি আমরা। সম্প্রতি বেশ কিছু আন্দোলনে পুলিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে আন্দোলনকারীদের উপর চার্জ করার। এছাড়াও বিভিন্ন অভিযোগ অনেককে গ্রেফতারও করা হয়। এই সমস্ত ঘটনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছে নানা মহল।

DA মামলায় হাইকোর্টকে অবমাননা, রাজ্যের শেষ সিদ্ধান্ত কি নেওয়া হল দেখে নিন।

শুধু এই বেতন বৃদ্ধিই নয়। TET দুর্নীতি, ১০০ দিনের কাজ, NCC দের ভাতা দিতে না পারায় মুখ পুড়ছে সরকারের। বিভিন্ন মহল এর মতানুসারে পশ্চিমবঙ্গ সরকার দেউলিয়া হতে চলেছে এটা তারই সংকেত। কিন্তু রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মাইনে বৃদ্ধির জন্য মামলা যে অযৌক্তিক রাজ্য সরকারের এই বক্তব্যকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কোর্টের সাফ কথা DEARNESS ALLOWENCE প্রত্যেক কর্মীর মৌলিক অধিকার সেটা থেকে কাউকে কোন শর্তেই বাদ দেওয়া যায় না। রাজ্য সরকারের কোষাগারের অবস্থা যে শোচনীয় সেটা নিয়ে রাজ্যের বক্তব্য শুনতে চায়নি আদালত।

রাজ্যের বিরোধী সহ নানা বুদ্ধিজীবীদের মত অনুসারে আমাদের রাজ্যের আর্থিক স্থিতি খুব একটা ভাল নয়। তা স্বত্তেও একের পর এক বিনামূল্যে প্রকল্প নিয়ে আসা হচ্ছে। যেটার হয়তো কোন প্রয়োজনই নেই। শুধু এই অভিযোগ বুদ্ধিজীবীদেরই নয়, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই কথা কার্যত একপ্রকার স্বীকার করে নিয়েছেন। তার বক্তব্য যত দিন যাচ্ছে আমাদের আর্থিক পরিস্থিতি খারাপ হতে চলেছে। আর মুখ্যমন্ত্রীর নিজের এই মন্তব্যে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকে। এরই মধ্যে বেশ কিছু বিরোধী নেতারা বলেছেন, হয়তো আগামী মাস থেকে আর সরকারি কর্মীরা বেতন পাবেন না।

এই বছরের এক দুর্গাপুজার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলেছেন “আমাদের বর্তমানে আর্থিক স্থিতির কথা চিন্তা করলে আমার রাতে ঘুম আসে না”। এর পরেও তিনি প্রতি পুজো কমিটি গুলিকে মত ২৫৮ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। এই নিয়েও আদালতে মামলা গড়িয়েছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক পুজো কমিটি টাকা পায় এবং ভাল ভাবে দুর্গা পুজা সম্পন্ন হয়। এই নিয়ে বেশ কিছু মহলের মত এইগুলি ন্যায্য, আর DA টা অন্যায় আবদার।

এবার দেখে নেওয়া যাক “মহার্ঘ ভাতা” নিয়ে বর্তমানে কি পরিস্থিতি। চলতি বছরের মে মাসে আদালত আগামী তিন মাস অর্থাৎ আগস্ট মাসের মধ্যে বকেয়া বেতন দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর রাজ্য সরকার পুনরায় বিবেচনা করার জন্য হাইকোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে কিন্তু এই আর্জি খারিজ করে আদালত সাফ জানিয়ে দেয়, আমাদের আগের রায় বহাল থাকবে।

এর পরে তিন মাস পেরিয়ে গেলেও কোন সমাধান সূত্র না পেয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার জন্য মামলা করা হয়। এই প্রসঙ্গে কোর্টের তরফে সরকারকে তাদের পক্ষ রাখার কথা জানাতে বললে রাজ্য জানায় তারা এই মামালার সঠিক বিচার পেতে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে। এর সাথে আরও বক্তব্য এই DA দিলে রাজ্যের ওপরে এক আর্থিক বিপর্যয় নেমে আসবে।

প্রতিদিন এই সমস্যা আরও বৃহৎ রূপ নিচ্ছে এই মামলা। এই পরিস্থিতি সামলাতে এবার ময়দানে নামলেন রাজ্যের বর্তমান অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তার বক্তব্য “সরকারি কর্মীদের DA একটা অতি সংবেদনশীল ব্যাপার”। তার রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের কাছে আবেদন তারা একটু ধৈর্য ধরুন। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সবার কথা চিন্তা করেন একটু সময় দিন।

পশ্চিমবঙ্গের সরকারী কর্মীদের Salary Hike বা DA এবার দিল্লী থেকে আসবে, সুপ্রীম কোর্ট থেকে বড় আপডেট।

এর সাথে উনি আরও বলেন ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ১২৫% মহার্ঘ ভাতা বা DA বাড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই হারে কেন্দ্রীয় সরকারও দেয়নি। যদিও এই কথা নিয়ে একপ্রকার হাসাহাসি চলছে স্যোশাল মিডিয়ায়। এবার আগামী ৫ ডিসেম্বর সুপ্রীম কোর্ট কি নিরদেস দেয় সেটাই দেখার। তবে কর্মীদের একটাই আশা যে সুপ্রীম কোর্টের পর আর রাজ্যের DA না দিয়ে কোথাও যাওয়ার যায়গা থাকবে না।

1 thought on “পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের DA বৃদ্ধি নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত। স্বস্তি কর্মী মহলে।”

Leave a Comment