সবার বাড়িতে বসবে Smart Meter, কারেন্ট বিল বাড়বে না কমবে?

বাড়ি বাড়ি ঘুরে মিটার রিডিং নেওয়ার কাজ এখনো অতীত। বদলে যেতে চলেছে ইলেকট্রিক বিল এর সম্পূর্ণ সিস্টেম। বাড়িতে বসবে Smart Meter. এতদিন দেখা যেত, ইলেকট্রিক দপ্তরের কর্মী বা তাদের কন্ট্রাক্ট দেওয়া কোনো সংস্থার কর্মীরা প্রতিটি বাড়ি, দোকান বা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মিটার রিডিং দেখে বিদ্যুতের বিল তৈরি করে দিচ্ছেন। এবার থেকে আর তা হবে না। নয়া নিয়ম আসতে চলেছে ইলেকট্রিক বিল এর ক্ষেত্রে। যেভাবে মোবাইল ফোন রিচার্জ করা হয়, ঠিক একই পদ্ধতিতে ইলেকট্রিক বিল এর ক্ষেত্রেও প্রিপেইড রিচার্জ করতে হবে।

Smart Meter বাড়িতে বসলে কী হবে?

মোবাইল ফোনের রিচার্জ প্ল‍্যানের সময়সীমা পার হলেই যেভাবে কানেকশন বন্ধ হয়ে যায়, আর যোগাযোগ করা যায় না, ঠিক একইভাবে ইলেকট্রিকের প্রিপেইড যে রিচার্জ গ্রাহকেরা জমা দেবেন, তার সময়সীমা পার হয়ে গেলেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তবে হ্যাঁ, তার আগে গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ বিল শেষ হওয়ার মেসেজ আসতে পারে। এবার থেকে ডিজিটাল এর বদলে গ্রাহকদের বাড়িতে বসতে চলেছে স্মার্ট মিটার (Smart Meters For Electricity Bill)।

ইতিমধ্যে সল্টলেক, রাজারহাট, শ্রীরামপুর এবং গড়িয়া ডিভিশনের বহু এলাকায় বিদ্যুৎ দপ্তরের তরফে স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। তার পাশাপাশি হুগলি জেলাতেও পুজোর পরে এই স্মার্ট মিটার বসতে চলেছে। আর তার আগেই হুগলি জেলার বৈচি বিদ্যুৎ দপ্তরে সারা বাংলা বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির ২৫ শাখার তরফে স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে। সেখানেই তারা বিদ্যুৎ দপ্তরের স্মার্ট মিটার বসানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

সারা বাংলা বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির বৈচি শাখার তরফে যে স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে, সেখানে তাদের মতে, Smart Meter চালু হলে একজন গ্রাহকের বিদ্যুতের বিল কত আসছে, সেটা যেমন দেখে পরের মাসে জমা দেওয়া হয়, কিন্তু এই প্রিপেইড মিটারের ফলে আর সেই পদ্ধতি থাকবে না। টাকা আগে জমা দিতে হবে। তাও জানতেও পারবেন না কবে নাগাদ তার টাকা শেষ হচ্ছে। তার কারণ, তিনি মিটার রিডিং দেখতে পাবেন না।

মাত্র 900 টাকায় কম কারেন্ট বিল আসার ফ্যান তৈরী পশ্চিমবঙ্গে। সারা মাসে 10 টাকা কারেন্ট বিল।

তবে মোবাইলে এক সপ্তাহ আগে মেসেজের মাধ্যমে জানতে পারবেন তার টাকার পরিমান শেষ হয়ে আসছে। আবার দেখা যায়, যদি রাত বারোটার পরে টাকা শেষ হয়ে যায়, তাহলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে দপ্তরের তরফে কোনো আগাম নোটিশ বা বাড়ি গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে না। প্রিপেইড রিচার্জ শেষ, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। আর এর ফলে বিদ্যুৎ দপ্তরের বহু কর্মী বেকার হয়ে যাবেন। তাদের কাজ হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

তার সঙ্গে মানুষের উপরেও এক্সট্রা টাকার বোঝা চাপতে চলেছে। Fixed Charge-এর ক্ষেত্রে প্রতি KV ছিল 15 টাকা, সেটা বেড়ে হবে ৩০ টাকা। মিনিমাম চার্জ যেখানে ছিল 28 টাকা, সেটা এবার বেড়ে গিয়ে হবে ৭৫ টাকা। এই বিষয়ে রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রীর কাছেও প্রতিবাদ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন হুগলি জেলা কমিটির সহ-সম্পাদক। তবে বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকদের মতে, সল্টলেক, রাজারহাট, গড়িয়া সহ বেশ কিছু জায়গায় স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ চলছে।

চাঁদের মাটিতে পা রাখলো চন্দ্রযান। 14 দিন ধরে কি কি করবে ল্যান্ডার বিক্রম? দেখুন পুরো মিশন

হুগলি জেলাতেও জরিপির কাজ শেষ হয়েছে। পুজো মিটলেই কাজ হবে। তবে এখন সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতেই এই কাজটি চলবে। অ্যাডভান্স টেকনোলজি দিয়ে এই Smart Meter তৈরি হয়েছে। ফলে গ্রাহকদের অসুবিধা হবে না। বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলেই কন্ট্রোল রুমের কাছে সঙ্গে সঙ্গে মেসেজ চলে যাবে। কেউ অবৈধভাবে কিছু করছে কিনা তার জন্য ফোনে মেসেজ যাবে। তবে বিদ্যুৎ দপ্তরের Smart Meter বসানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এদিন হুগলি জেলার বৈঁচি শাখায় ডেপুটেশন জমা দিয়েছে সারা বাংলা বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতি।

Leave a Comment