PM Suryoday Yojana – ইলেক্ট্রিক বিল নিয়ে চিন্তার দিন শেষ, সরকারে এই প্রকল্পে আবেদন করলে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ পাবেন
কেন্দ্রীয় সরকার জনসাধারণের জন্য অনেক ধরনের প্রকল্প নিয়ে এসেছে এতদিন ধরে। প্রধানমন্ত্রী ২০২৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি এই প্রকল্পটি (PM Suryoday Yojana) চালু করেছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন স্কিমের মাধ্যমে জনসাধারণ অনেকটাই আর্থিক সহায়তা লাভ করেছে। মোদী সরকার নতুন যে স্কিম টি চালু করেছেন তার নাম হলো প্রধানমন্ত্রী সূর্যঘর যোজনা।
PM Suryoday Yojana Apply for Free Electricity Bill
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ আমাদের সাথে কোন না কোন কারণে জড়িয়ে আছে। আলো জ্বালানো থেকে শুরু করে পাখা, এসি, কুলার, ফ্রিজ, মোবাইল চার্জ, ইলেক্ট্রিক আয়রন, টিভি, ইলেক্ট্রিক কেটল, সবেতেই বিদ্যুৎ অপরিহার্য। বিদ্যুৎ ছাড়া একটি দিনও চলা অসম্ভব তবে বিদ্যুতের যে হারে দাম বাড়ছে নিত্যদিন তাদের সাধারণ মানুষের পকেটের চাপ বাড়ছে। তবুও ন্যূনতম আলো, পাখা না চালালেই নয়।
বিশেষ করে গরমকালে পাখা সারাদিন চালিয়ে রাখার জন্য ইলেক্ট্রিক বিল আসছে অনেক যা দেখে রীতিমত আতঙ্কে সাধারণ মানুষ। কেন্দ্রীয় সরকার এই বিদ্যুতের খরচ যাতে কমে সেইজন্য নতুন একটি স্কিম (PM Suryoday Yojana) চালু করেছে। এই স্কিমে আবেদন করলে আপনি মাসে ৩০০ ইউনিট ফ্রি ইলেক্ট্রিক পেয়ে যাবেন। সেইসাথে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় করতে পারবেন। জানা যাচ্ছে দেশের এক কোটি মানুষ এই সুবিধা পেতে চলেছে।
এবার আপনি ভাবছেন ৩০০ ইউনিট ফ্রি বিদ্যুৎ কিভাবে কেন্দ্র সরকার দেবে? সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো বলেই আজকের প্রতিবেদন। বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। ছোটবেলা থেকেই আমরা বহু প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তির উৎস সম্পর্কে জেনেছি সূর্য হচ্ছে সেরকমই অপ্রচলিত শক্তির উৎস। সূর্যের আলোকে একটি যন্ত্রের মধ্যে ধরে রেখে আমরা তৈরি করতে পারি সৌরশক্তি (PM Suryoday Yojana). আমরা জানি, সূর্যের সেই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে লাইট, পাখা চালানো যায়।
কিন্তু একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে নিজের বাড়িতে সোলার প্যানেল বসানো অনেকটাই ব্যয় সাপেক্ষ ব্যাপার তাই অনেকে সুবিধা থাকলেও বসাতে পারেনা। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সোলার প্যানেল বসানোর জন্যই সাধারণ মানুষকে কিছু টাকা দেবে। এই সোলার প্যানেল বসানোর ফলে আপনি ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিনামূল্যে পাবেন এ ছাড়া আপনি আপনার চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারেন সেই অতিরিক্ত ব্যবহারের জন্য সরকার ভর্তুকি প্রদান করবে। সরকার বিভিন্ন আয়ের ভিত্তিতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির জন্য ভর্তুকি নির্ধারণ করবে।
যেমন, কোনো পরিবার যদি ২ কিলোওয়াট পর্যন্ত সোলার প্ল্যান্ট বসায় তাহলে সেই খরচের ৬০% ভর্তুকি আকারে তার অ্যাকাউন্টে আসবে। একই সাথে, কেউ যদি ৩ কিলোওয়াটের প্ল্যান্ট স্থাপন করতে চান, তাহলে অতিরিক্ত ১ কিলোওয়াটের প্ল্যান্টে ৪০% ভর্তুকি পাওয়া যাবে। একটি ৩KW প্ল্যান্ট স্থাপন করতে প্রায় ১.৪৫ লক্ষ টাকা খরচ হবে। এর মধ্যে ৭৮ হাজার টাকা ভর্তুকি দেবে সরকার। আর বাকি ৬৭,০০০ টাকা আপনি সরকার থেকে ঋণ হিসাবে নিতে পারেন। এমনটাই সুবিধা দিচ্ছ কেন্দ্রীয় সরকার।
এই সৌর প্যানেল বসানোর সুবিধা গুলো কি কি
১) আর সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ কমবে।
২) আপনার ইলেক্ট্রিক খরচ কমে যাবে।
৩) গরমকালে হুটহাট কারেন্ট চলে যাওয়া থেকে নিষ্কৃতি পাবেন ।
কি কি যোগ্যতা লাগবে
১) আবেদনকারীর ছাদে মোট জায়গা থাকতে হবে ১৩০ বর্গ ফুট। তাহলেই আপনি আবেদন করতে পারবেন এই প্রকল্পের জন্য। কোনো আবেদনকারী যদি ২kw ‘রুফটপ সোলার প্যানেল‘ বসাতে চান তাহলে সেই ব্যক্তির সর্বমোট ৪৭ হাজার টাকা খরচ হবে। এই খরচের মধ্যে ১৮ হাজার টাকা সরকার ভর্তুকি হিসাবে আবেদনকারী ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেবেন। অর্থাৎ আবেদনকারীকে এই প্রকল্পের (PM Suryoday Yojana) জন্য বাদবাকি ২৯ হাজার টাকা নিজের থেকে দিতে হবে।
৪৭ হাজার টাকায় যে সোলার প্যানেলটি বসানো হবে সেটি দৈনিক ৪:৩২ Kwh/day বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম অর্থাৎ বাৎসরিক হিসাব অনুযায়ী ১৫৭৬ kwh/Year বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। এই সোলার প্যানেল বসানোর ফলে এক একটি পরিবার দৈনিক ১২.৯৬ টাকা এবং বছরে ৪৭৩০ টাকা সেভ করতে পারবে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, কোন ব্যক্তির ছাদ যদি ৭০০ বর্গফুট হয় তাহলে সেই ব্যক্তিকে ৩ কিলোওয়াট সোলার প্যানেল বসানোর জন্য আবেদন করতে হবে (PM Suryoday Yojana).
এই প্যানেল এবং এর যোগ্যতা অনুযায়ী মিটার বসাতে সেই ব্যক্তির ৮০ হাজার টাকা খরচ হবে। আপনার ছাদের বর্গুফুট অনুযায়ী সোলার প্যানেল বসানোর খরচ অনুযায়ী ভর্তুকি পরিমাণ নির্ধারিত হবে। খরচ বৃদ্ধি পেলেও সাথে ভর্তুকের টাকাও বৃদ্ধি পাবে এবং তখন সেই ব্যক্তি ভর্তুকি হিসাবে ৩৬ হাজার টাকা পেয়ে যাবেন। সুতরাং উক্ত পরিমান জায়গাতে প্যানেলটি বসাতে খরচ পড়বে মাত্র ৫০ হাজার টাকা। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ক্ষমতা যুক্ত মিটারের জন্য একজন ব্যক্তি ৭৮ হাজার টাকা অবধি ভর্তুকি পেতে পারে।
২) আবেদনকারীকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।
৩) আবেদনকারীর পরিবারকে দরিদ্র বা মধ্যবিত্ত পরিবারের হতে হবে সেইসাথে একটা নিজস্ব ছাদের ঘর থাকতে হবে।
৪) আবেদনকারী বাড়িতে সোলার প্যানেল বসে যাওয়ার পর ডিসকম (DISCOM)-এর মাধ্যমে সোলার প্যানেল পরীক্ষা করা হবে তারপর আবেদনকারীকে পোর্টাল থেকে কমিশনিং সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে যেটা এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর দেওয়া হয়।
আবেদন পদ্ধতি
১) প্রথমে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ গিয়ে অ্যাপ্লাই ফর রুফটপ সোলার অপশনটি ক্লিক করতে হবে।
২) এরপর আবেদনকারীকে নিজের রাজ্য এবং পছন্দমত বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির নাম বেছে নিতে হবে এবং বিদ্যুৎ গ্রাহক নম্বর, মোবাইল নম্বর ও ইমেইল ইনপুট করতে হবে (PM Suryoday Yojana).
আরও পড়ুন, জুলাই মাস তো পড়ে গেল, কবে ঢুকবে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা?জেনে নিন নতুন আপডেট
৩) এরপর আবেদনকারীকে গ্রাহক নম্বর বা কনজিউমার নম্বর ইনপুট করে নতুন একটি পেজ লগইন করতে হবে। এরপর নিজের ডিটেইলস পূরণ করে ফ্রম ফিলাপ করতে হবে। এভাবেই আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। আবেদনের পরে সেই ব্যক্তি বাড়ির ছাদে সোলার প্যানেল বসাতে পারেন। বসানোর জন্য ডিশকম (DISCOM)-এ নির্দেশিত করা বিক্রেতার কাছ থেকেই এই প্যানেলটি বসাতে হবে। বাড়িতে সোলার প্যানেল টি বসে গেলে আবেদনকারীকে প্যানেলের বিবরণ দিয়ে নেট মিটারের জন্য আবেদন জানাতে হবে (PM Suryoday Yojana).
এভাবেই আপনি অর্ধেক টাকা ভর্তুকি পেয়ে সাথে ৩০০ ইউনিট ফ্রি বিদ্যুৎ পেয়ে যাবেন এই প্রকল্পের (PM Suryoday Yojana) মাধ্যমে। মূল্যবৃদ্ধির বাজারে এমন সোলার প্যানেল বসানোর সুবর্ন সুযোগ পাওয়াটা হাতছাড়া না করাই ভালো। আপনার বাড়ির ছাদ থাকলেই আবেদন জানিয়ে ফেলুন আর কম খরচে অফুরন্ত বিদ্যুৎ পেয়ে যান।
Written by Shampa Debnath.