TET Case – কি রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট জানুন বিস্তারিত।
বহুদিন ধরে চলে আসছে শিক্ষক নিয়োগ (TET Case) দুর্নীতি মামলা। এবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বড় পরাজয়ের মুখ দেখল রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্টের রায় সামনে আসার পর থেকেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন মামলাকারীরা। এতদিন যারা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতামত কে সমর্থন করে এসেছেন, অবশেষে তাঁদের মুখে হাসি ফুটেছে। কারণ দেশের সর্বোচ্চ আদালত রাজ্য সরকারের আবেদন কে খারিজ করেছে। আর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকেই মান্যতা দিয়েছে।
আসলে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও শিক্ষক পদে চাকরি পান। এর বিরুদ্ধে মামলা করেন ববিতা সরকার। এই মামলাকে ঘিরেই ঘটনার সূত্রপাত। ২০১৬ সালে হওয়া এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে যে চরম দুর্নীতি (TET Case) হয়েছিল তা এখন সকলেরই জানা। প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা পরেশ অধিকারীর মেয়ে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও চাকরি পেয়ে গিয়েছিলেন। নিয়োগ দুর্নীতি মামলা দায়ের হওয়ার প্রথম পর্যায়ে এই কথা সবার সামনে আসে।
টাকা তো কামাচ্ছেন, জমাতে কি পারছেন? জেনে নিন টাকা সঞ্চয়ের কিছু টিপস।
শিলিগুড়ির চাকরিপ্রার্থী ববিতা সরকার এর বিরুদ্ধে প্রথম মামলা (TET Case) করেন। প্রথমেই তিনি দারস্ত হয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের। মেধা তালিকার ওয়েটিং লিস্টে তাঁর নাম ছিল। তাঁর থেকেও অনেক পিছনে নাম ছিল অঙ্কিতা চৌধুরীর। কিন্তু যখন চরম তালিকা বের হয় দেখা যায় ববিতা সরকারকে পিছনে ফেলে সামনে নাম উঠে এসেছে অঙ্কিতা অধিকারীর। যা মেনে নিতে পারেন নি ববিতা সরকার।
ববিতা সরকারের এই মামলা উঠেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চে। দীর্ঘদিন এই মামলা চলার পর অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন, অঙ্কিতা অধিকারীর সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়ার কথা। তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন অঙ্কিতা অধিকারী কে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার আর সম্পূর্ণ মাইনে ফেরত দেবার। অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি ববিতা সরকারকে দেওয়ার কথাও বলেন। কিন্তু এর কিছুদিন পরেই নতুন মামলা দায়ের হয়।
তাতেই কার্যত ঝড় উঠে যায় বাংলার বুকে। প্রিয়াঙ্কা সরকার নামে একজন চাকরিপ্রার্থী দাবি করেন ববিতা সরকারের থেকে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর বেশি ছিল। আবার মামলা ওঠে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। তিনি স্কুল সার্ভিস কমিশনকে (TET Case) নির্দেশ দেন প্রিয়াঙ্কা সরকার ও ববিতা সরকারের পরীক্ষার খাতা থেকে শুরু করে ইন্টারভিউ মার্কস সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখার। এরপর জানা যায় ববিতা সরকারের চাকরিতে আসলে অধিকার প্রিয়াঙ্কা সরকারের। তাই সেই চাকরি প্রিয়াঙ্কাকে দেওয়ার নির্দেশ দেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ নিয়ে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, আগস্ট মাসেই।
পুনরায় কলকাতা হাইকোর্টের মামলা দায়ের করেন ববিতা সরকার। এরপর সামনে আসে ২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষার ভিত্তিতে হওয়া শিক্ষক নিয়োগে চরম দুর্নীতি আর অনিয়মের চিহ্ন। ৫০০০ শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল। তার মধ্যে থেকে ৯০৭ জন এর ওএমআর শিটে ছিল কারচুপি। এই কারণে বহু যোগ্য চাকরিপ্রার্থীকে অন্যায় ভাবে বাদ দেওয়া হয়েছিল। আর সেই জায়গায় ঘুষের বিনিময় ও সরকারকে তোষামোদ করে জায়গা পেয়েছিলেন অনেক অযোগ্যরা। এবার অপেক্ষা সব ভুয়ো শিক্ষকদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করে যোগ্য প্রার্থীদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার।